সর্বনাশা নদী

উজানে মানুষের ঢল নেমেছে ভাটিতে হচ্ছে সারা
কেঁদে কেঁদে রাতদিন কাটছে তাদের হয়েছে দুকূল হারা
ফসল খেয়েছে রাক্ষুসী বান ভিটে খাচ্ছে নদী
ওহে দয়াময় দরদী তোমার এ কেমন নিঠুর খেলা।
অসহায় যারা কি করবে তারা ভেবে না পায় আজ
ছোট্ট শিশুরে বুকেতে জড়ায়ে ভারি হয়ে আসে শ্বাস
তিন কূলে তাদের কেউ নেই আর এই ভিটেটুকু ছাড়া
সর্বনাশা রাক্ষুসে নদী গিলে খাচ্ছে তাহা।
কতো হাসি-গান, প্রাণের মায়া আছে যতো সব ছবি
সকল স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এই ভিটেটুকু ঘিরি
দাদার কবর রয়েছে এখানে দাদী আছে পাশে শুয়ে
মনে হয় যেন যুগ যুগ ধরে ভালোবেসে পরস্পরে।
গাছের ছায়ায় প্রাণ জুড়াতো মাঠ থেকে দাদা এসে
দেখে ফলের বাহার হাসিটি লেগে রইতো তাঁর দু’ঠোঁটে
সেই তরু-পল্লব খাচ্ছিস রাক্ষুসী ছেলেবেলার যতো ছোঁয়া
মাঠে থাকা মোর সোনালী হাসি আগেই করেছিস সারা।
সোনালি খড়ের ঘন স্তূপে যখন মাতাল হাওয়া যেত বয়ে
হাসি হলেও সত্যি সেই গন্ধ শুঁকে মনটা উঠতো নেচে
পাখিরা এসে তরুর ছায়ায় বসে হিংসায় মরতো দেখে
সর্বনাশা নদী সবকিছুই তো আজ তোর পেটে গিয়েছে চলে।
ও হে দয়াময় তোমার খেলা বুঝা যে বড়ই দায়
যে আজ আমীর কালকে তাঁরে ভিক্ষুক বানিয়ে দাও
পেটে ভাত নেই ক্ষুধার লাগি দুয়ারে দুয়ারে ভিক্ষে মাগি
এবার তুমি আমার পানে মুখটি তুলে চাও।

0 মন্তব্যসমূহ