নীল শাড়ী

সকাল বেলা। সোহেল ঘুম থেকে উঠেই দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সকাল নয়টা। সর্বনাশ! আজ সকাল সাড়ে নয়টায় যে মৌরির সাথে তার দেখা করার কথা। আর দেরী না করে দ্রুত রওনা দেয় টিএসসির দিকে। দীর্ঘ এক বছর পর আজ তারা মুখোমুখি হবে। এই এক বছর তারা শুধু মুঠোফোনে কথাই বলেছে। কিন্তু কখনও দেখা হয়নি। মৌরির সাথে পরিচয় একটা মিস্‌ড কলের সূত্র ধরে। মিস্‌ড কলটা দিয়েছিল মৌরিই। পরিচয়ের পর থেকে বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব থেকে ভালোবাসা। সেই ভালোবাসার একবছর পূর্তি আজ।
-মৌরি তুমি কোথায়?
-অপরাজয় বাংলার সামনে, রিকসায়।
-তোমাকে আমি চিনব কেমন করে?
-আমি একটি নীল শাড়ী পড়ে রাজু ভাস্কর্জের সামনে দাড়িয়ে থাকবো। কিন্তু তোমাকে আমি চিনব কেমন করে?
-আমি সাদা শার্ট আর কালো জিন্স পড়ে আসছি।
হ্যালো, হ্যালো কিন্তু মুঠোফোনের অপর প্রান্ত থেকে কিছুই শুনতে পায় না সোহেল। মনের অজান্তেই বুকটা একবার কেঁপে ওঠে তার। দ্রুত রিকসা নিয়ে টিএসসির সামনে আসতেই দেখে রাস্তায় অনেক লোকের জটলা। রিকসা থেকে নেমে সামনে এগিয়ে দেখে নীল শাড়ী পরা একটি মেয়ে রাস্তায় পড়ে আছে। সোহেল দ্রুত মেয়েটিকে রিক্সায় তুলে রওনা দেয় মেডিক্যালের দিকে। নীল শাড়ী পরা মেয়েটি একবার চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে আবার বন্ধ করে দেয়।
-আপনি কি মৌরি? জিজ্ঞাসা করে সোহেল।
-হ্যাঁ। আপনি?
-মৌরি আমি তোমার সোহেল। কিন্তু কথাটি মনে হয় কানে যায় না তার। কি যেন বিড়বিড় করে বলতে থাকে মেয়েটি। কানটি মৌরির মুখের কাছে নিয়ে আসতেই শুনতে পায়-মৌরি বলছে, তুমি নীল শাড়ী পছন্দ করতে; আকাশের মতো নীল। এই দেখ আজ আমি তোমার জন্য নীল শাড়ী পরেছি। পছন্দ হয়েছে তোমার? আর কোন কথা বলতে পারে না মৌরি। ধীরে ধীরে মাথাটি এলিয়ে দেয় সোহেলের বুকের দিকে। সোহেলের সাদা শার্ট রক্তে লাল হয়ে ওঠে।

0 মন্তব্যসমূহ